শঙ্কায় আজহারী, দীর্ঘ স্ট্যাটাস ফেসবুকে



স্টাফ রিপোর্টার :

নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের বুকে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়। জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের পর জাতি আজ নতুন করে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করছে। বিজয় দিবস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারকারা বিভিন্ন পোস্ট দিয়েছেন। বাদ যাননি দেশের জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীও।


সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে মহান বিজয় দিবসের অনুভূতি প্রকাশ করে একটি দীর্ঘ এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।



স্ট্যাটাসে মিজানুর রহমান আজহারী লিখেছেন, ‘এবারের বিজয়-দিবসটি অন্যরকম। সত্যিই অন্যরকম অনুভূতি। কারণ জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি যে এখনো তাজা। স্বাধীনতা ২.০ এর স্বাদ নিয়ে আমরা উদযাপন করছি— এবারের বিজয়ের দিনটি। কিন্তু আজকের এই দিনে দাঁড়িয়ে আমি খুব করে ভাবতে চাই— জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহত ভাইবোনদের ত্যাগের যথাযথ মূল্য কি আমরা দিতে পেরেছি।’



আজহারী আরও লিখেছেন, ‘একাত্তরে আমরা লড়াই করেছিলাম— জালিম রেজিমের বিরুদ্ধে। অন্যায় আর বৈষম্যের বিরুদ্ধে। কিন্তু বছর না-ঘুরতেই আমাদের সেই বিজয় লুট হয়ে যায়। দেশ চলে যায় পুঁজিপতিদের পকেটে, কালচারাল এলিটদের দখলে। যার ফলাফল— ’৭৪-এর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। যার ফলাফল— নিজ দেশে থেকেও আমরা কোণঠাসা। এই কালচারাল এলিটরা বিগত ৫০ বছরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে নিজেদের খায়েশমতো ফ্রেইমিং করেছে। মুক্তিযুদ্ধে যেখানে অংশই নিয়েছে এদেশের আপামর মুসলিম জনতা, সেখানে মুসলিমদেরকেই বানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিপক্ষ। দাড়ি-টুপিকে বানিয়েছে রাজাকারের প্রতীক। কালচারাল এলিটদের এই তীব্র মেরুকরণের ফলাফল— আজকের বৈষম্য আর ফ্যাসিজম।

বাংলাদেশের জনপ্রিয় এই ইসলামিক বক্তা আরও লিখেছেন, ‘তাই বিজয়ের দিনে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই— জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার প্রতীক ছিল মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধ। তাদের হৃদয়ে ছিল শহিদি আকাঙ্ক্ষা। মজলুম, শহীদ, আল্লাহর সাহায্য— এসব পরিভাষাই সেদিন আন্দোলনকে ট্রিগার করেছিল। মানুষকে চুম্বকের মতো টেনে এনেছিল রাজপথে। একাত্তরও এর ব্যতিক্রম কিছু ছিল না।



বিজয়ের এই দিনটা উদযাপনের। একইভাবে ভবিষ্যৎ-কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করবার। আমরা এমন একটা বাংলাদেশ গড়তে চাই— যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। এমন একটা বাংলাদেশ, যেখানে কারও ধর্মীয় মূল্যবোধকে দমন করতে, কোনো ‘জঙ্গি’ নাটক সাজানো হবে না। এমন এক বাংলাদেশ, যেখানে রাজনৈতিক সুবিধা হাসিলের উদ্দেশ্যে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ছক আঁকা হবে না। যেখানে নিশ্চিত হবে সকল বিশ্বাসের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। আগামীর বাংলাদেশ হবে জনতার বাংলাদেশ।